Featured

থ্রাশ প্রেসক্রিপশন!

থ্রাশ মেটাল মানেই উন্মাদনা! গিটার রিফের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সুসংগত প্রকাশ থ্রাশ মেটালের মতো করে কোথাও পাওয়া যাবে না। মেটালিকা, মেগাডেথ, স্লেয়ারের গান সব মেটালহেডেরই কম-বেশি শোনা আছে। সেরা ১০ টা থ্রাশ এলবাম করতে গেলে এই তিনটা ব্যান্ডেরই আধিপত্য থাকবে। তার মানে কি বাকি ব্যান্ডগুলো ঘাস খায়? না! ওরা বিয়ার খায়! আরও অনেক কিছু খায়,সেটা এই পোস্টের বিষয়বস্তু না।
মেটালিকা, মেগাডেথ, স্লেয়ারের এলবাম বাদ দিয়ে সেরা ৭ টা থ্রাশ এলবামের তালিকা করলে তাতে কী কী থাকবে? আসেন দেখি, দেখে ঝাঁকাই!

7. Tankard- Kings of Beer –
1643
বিয়ারের কথা যখন বলা শুরু করলাম, বিয়ার নিয়ে একটা এলবাম রাখাই যায় লিস্টে। জার্মান থ্রাশ মেটালের বিয়ার বিষয়ক মন্ত্রনালয় এই ব্যান্ডটি চালায়! ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ার খাওয়া হয় অনেক, মিউজিকাল ক্যারিয়ারেও বিয়ার নিয়ে অনেকগুলো গান আছে ট্যাংকার্ডের। অস্থির সব রিফ শুনে খেয়ে মাতাল হওয়ার ইচ্ছা হতেই পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ভালো আমেরিকান থ্রাশ ব্যান্ডগুলো যেখানে ভালো মানের রিফ-খরায় ভুগছে সেখানে জার্মান ব্যান্ডগুলোর দৃশ্য আলাদা। সলোগুলো কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক টাইপ মনে হতে পারে, তবে ব্যস্ত দিনশেষে মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেলার জন্য “Kings of Beer” বাজিয়ে দিন। একদম বেজে যাবে!
6. Sepultura- Roots –
276
আমেরিকা বা জার্মানির বাইরে উল্লেখযোগ্য থ্রাশ করতে পেরেছে খুব কম ব্যান্ড, সেপালতুরা তাদের মধ্যে সেরা! থ্রাশ মেটালের সাথে ব্রাজিলিয়ান আদিবাসী সঙ্গীতের মিশ্রণে কি চখাম বস্তু তৈরি হয় সেটা শুনতে “Roots” শুনতে হবে। ম্যাক্স কাভালেরা আর আন্দ্রেস কিসারের গিটার, ইগর কাভালেরার ড্রামিং, আদিবাসী ফ্লেভার, সবমিলিয়ে সেপালতুরার সেরা থ্রাশ এলবাম নিঃসন্দেহে Roots। দ্বিতীয় অবস্থানে Arise থাকবে অবশ্যই। যারা টিপিকাল থ্রাশ শু০নতে শুনতে বোরড, তারা এক্ষুণি এই বুলশিট পোস্ট পড়া বাদ দিয়ে সেপালতুরা শুনতে শুরু করে দিন।
5. Exodus – Bonded by Blood –
EXODUS-Bonded-by-Blood-POSTER
কেউ যদি ভেবে থাকেন এখানে “Bonded by Blood” ছাড়া আর কোন এলবাম হওয়ার কথা, তাহলে আপনি এক্সোডাস ভালোমতো শুনেন নি!
মানতেই হবে, এই এলবামের সাউন্ড অনেক বেশি RAW; “well produced”-ও না ,কিন্তু পল বেলফের গলা আর গ্যারি হল্টের রিফ – দুইয়ে মিলে এই এলবাম এখনও পর্যন্ত এক্সোডাসের ডিস্কোগ্রাফিতে অদ্বিতীয়। “Strike of the Beast” এর ইনট্রো শুনলে আমার রীতিমতো “সব ভাইংগালামু” টাইপের অনুভূতি হয়! আর লিরিক? লিরিকের নমুনা –
“Nothing can save them now
You’ve learned a lesson in violence
Get on your knees and bow
Or learn a lesson in violence”
~A Lesson in Violence

যারা এনার্জি ড্রিংক টাইপ জিনিস খুব বেশি খান তারা এক্সোডাস খেয়ে দেখতে পারেন! এনার্জি ড্রিংককে পানি মনে হবে!
4.  Overkill – Horrorscope –
OverkillHorrorscope19912453_f
“This is your horrorscope!”স্লো টেম্পোতে বাজানো একটা এলবাম, ভোকালিস্ট ববি ব্লিজ না থাকলে কিছু গানকে ডুম মেটাল বলে ভুল হতে পারে! মিউজিকবোদ্ধারা কেন যেন এই এলবামটা পছন্দ করেন না, সেকারণে আমিও তাদের পছন্দ করি না। আই মিন, একটা থ্রাশ এলবাম শোনার সময় এরকম ট্রেনে চড়ার মতো ছন্দময়,পিনিকময়,মধুময় রিফ আর কোথায় পাবেন!? টাইটেল ট্র্যাকটা শুনে দেখুন শুধু। প্রেমে না পড়লে বুঝতে হবে সামথিং ইজ রঙ উইথ ইউ! ডাক্তার দেখান!
3. Kreator – Phantom Antichrist –
Kreator_-_Phantom_Antichrist
ফিরে আসি জার্মানিতে। ক্রিয়েটরের প্রথমদিকের এলবামগুলো এত হেভি ছিল যে ওগুলোকে ডেথ মেটালের পাইওনিয়ার হিসেবে ধরা হয়। যেকোন থ্রাশ ব্যান্ডের সাথে ক্রিয়েটরের পার্থক্য করে দেবে মিলে পেট্রোজার ভোকাল। কানের ভেতর ছুরি চালানো রিফ, আর ওয়ান অব এ কাইন্ড গলা!

২০১২ তে রিলিজ হওয়া এই এলবামটা ক্রিয়েটরের মিউজিকের উৎকর্ষের চরম প্রমাণ। প্রথমবার যখন শুনলাম পুরো এলবাম, মাথা নষ্ট হয়ে গেল। তখন হেডফোন ছিল (গরীব বলে এখন হেডফোন নাই  *কান্নার ইমো হবে* ), সারাদিন কানে লাগিয়ে রাখতাম। আর মাঝে মাঝে গানের জোশ সামলাতে না পেরে চিৎকার করে পেট্রোজার মত কর্কশ গলায় গাওয়ার চেষ্টা করে গলা ভাঙতাম। থ্রাশ হলেও, ইনট্রোগুলো অসাধারণ। ক্রিয়েটরের গানে অর্থবোধক লিরিক পাওয়া যায় কম। “Phantom Antichrist” এ সেটাও আছে।

2. Testament – The Formation of Damnation –
187417
স্রেফ কোপাইসে। গিটারিস্ট এলেক্স স্কলনিক, এরিক পিটারসন আর ড্রামার পল বোস্টাফ কোপায়ে শেষ করে ফেলসে। দুর্বল কান ও দুর্বল হার্টের মানুষ কেউ নিশ্চয়ই থ্রাশ শুনে না। আল্লাহ বাঁচাইসে। নাহয় নির্ঘাত টেস্টামেন্ট এই এলবামের জন্য অনেকগুলো হত্যা-চেষ্টার দায়ে মামলার সম্মুখীন হতো। এই এলবাম নিয়ে কোন কথা হবে না।

 

 

1. Sodom – M-16 –
1000x1000
ব্যান্ডের নাম শুনে নাউজুবিল্লা, আস্তাগফিরুল্লা বলবেন না! কবি বলেছেন, “নাম কী বা আসে যায়!” এম-১৬ খুব বিখ্যাত একটা রাইফেলের নাম, মার্কিন সেনাবাহিনীতে বহুল ব্যবহৃত। যুদ্ধের থিমের উপর ভিত্তি করে এত ভালো থ্রাশ এলবাম তো বটে, মেটাল বা রক এলবামও খুব কম করা হয়েছে। ভায়োলেন্সের দৃশ্যগুলো যেন জীবন্ত শুনতে (!) পাওয়া যায়। “Napalm in the Mourning” গানের শুরুতেই যুদ্ধ নিয়ে নির্মিত “Apocalypse Now” সিনেমার বিখ্যাত লাইনটা শুনতে পাওয়া যায় (শুনে নিন!) । একটা গিটারিস্ট নিয়ে কিভাবে থ্রাশ বাজিয়ে ফাটিয়ে দিতে হয় সেটা সোডমের বার্নিম্যানের চেয়ে ভালো করে খুব কম গিটারিস্ট জানেন। অসাধারণ লিরিক, অসাধারণ ভোকাল, পরিমিত ড্রামিং, যথার্থ লিরিক – জীবনে কী লাগে আর! এই গানটার Wacken Open Air 2007 এর লাইভ পারফরমেন্সের কথা আর না-ই বললাম! নিজেই দেখুন!

*** ব্লগ নিয়ে যেকোন মন্তব্য করার থাকলে চেপে যান। চেপে যেতে না পারলে কমেন্ট করতে পারেন, রিপ্লাই দেওয়া হবে না!!!

হেভি মেটাল – চ্যাপ্টার ওয়ান

Iron Man – নামটা শুনে যদি আপনার প্রথমেই মার্ভেল কমিকসের চরিত্রটির আগে ব্ল্যাক সাবাথ ব্যান্ডের গানটির কথা মনে হয় – তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় আছেন!
ব্রিটেন – হেভি মেটালের সূতিকাগার!

m_TonyIommi03
Black Sabbath Lineup

সেই ১৯৭০ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার, আধ-পাগল এক ভোকাল অজি অসবোর্ন,  ডান হাতের দুইটা আঙুলের মাথা কাটা যাওয়া এক গিটারিস্ট টনি আয়োমি, লিরিসিস্ট হিসেবে অসম্ভব প্রতিভাবান এক বেজিস্ট গিজার বাটলার আর এক পাগলাটে ড্রামার বিল ওয়ার্ড –  মিলে বের করে “Black Sabbath” নামের এক গান, তাদের ব্যান্ডের নামটাও ব্ল্যাক সাবাথ। গানের শুরুর সেই ইনট্রো, যা “ডেভিলস ইন্টারভাল” বলে খ্যাত, রক মিউজিকের শ্রোতাদের মনে একটা ধাক্কা দিল।

১৯৬৯ এ বের হয়েছিল লেড জেপেলিনের প্রথম এলবাম। লোকাল কনসার্ট শেষে আসার সময় সাবাথের গাড়িতে বাজছিল এলবামটা।  অজি বলল, “দোস্ত দেখছিস, ওরা কত হেভি বাজায়?” আয়োমি সাথে সাথে জবাব দিল, “আমরা আরো হেভি বাজাবো!!!”

কথাটা সত্যি হয়েছিল আক্ষরিক অর্থেই। হেভি মেটালের অন্য দুই জায়ান্ট জুডাস প্রিস্ট আর আয়রন মেইডেন আসার আগেই ব্ল্যাক সাবাথের অধিকাংশ ট্রেডমার্ক এলবাম রিলিজ হয়ে গিয়েছিল। রক মিউজিকের লিরিক এমনিতেই বেশ অন্য ধাঁচের, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আগে থেকেই জনপ্রিয়। হেভি মেটালের সাউন্ড তাতে নতুন মাত্রা দিল। ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে গাওয়া গান “War Pigs” তার অনন্য উদাহরণ –

“Politicians hide themselves away,
They only started the war.
Why should they go out to fight,
They leave that role to the poor.

Time will tell on their power mind,
Making war just for fun.
Treating people just like pawns in chess,
Wait till their judgement day comes.”

অনেকগুলো এলবাম বেরুলো একে একে- Black Sabbath, Paranoid, Master of Reality, Vol. 4,Sabbath Bloody Sabbath , Sabotage। সাবাথের Symptom of the Universe গানটিকে প্রথম থ্রাশ মেটাল গান হিসেবেও ধরা হয়।

গিজার বাটলারের লিরিকের জাদু, আয়োমির রিফ, সলো, অজির গলা – সবমিলিয়ে ৭ বছরের মধ্যে কারখানার শ্রমিক, কসাই হিসেবে কাজ করা ছেলেগুলো সারা পৃথিবীতে খ্যাতি পেয়ে গেল। ব্ল্যাক সাবাথ নাম দেখে অনেকেই তাদেরকে স্যাটানিস্ট হিসবে ধরে নিয়েছিল। নাম নিয়ে সবচেয়ে মজার ঘটনাটা ঘটেছিল তাদের প্রথম আমেরিকা টুরের সময়। কনসার্টে এক কৃষ্ণাঙ্গ শ্রোতা খুব  চিৎকার করছিল। বিরক্ত অজির সাথে তার কথোপকথন এরকম –

“All right mate, you win. What the fuck do you want? Just tell me. What is it, eh?’
— “You guys ain’t black!”

6fb5f44b48b461928033cbd37cf41d20
Ozzy and Randy Rhoads

অজি অসবোর্ন, যিনি কিনা গ্লাভস না পরে চুরি করে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কারণে ধরা পড়েছিলেন – এই খ্যাতি আর টাকা তার মধ্যে অন্যরকম প্রভাব ফেলল। এমনিতেও পারফেক্ট স্মুথ রান বলে কিছু নেই। অতএব, ইতিহাসকে ইন্টারেস্টিং করতে ব্যান্ডে ঘটে গেল ছন্দপতন। সব মেম্বারই ড্রাগ নিতেন, তবে অজি অসবোর্ন নিজেকে মোটামুটি ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিই বানিয়ে ফেলেছিলেন! অঢেল টাকা আর আসক্তি – ভয়াবহ মাত্রায় মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য এর বেশি কিছু এমনিতেও লাগে না। তখন বাজারে পাওয়া যেত কিন্তু অজি নেন নি এমন ড্রাগ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিনই ছিল!! আর, কেমন যেন বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলেন বাকি মেম্বারদের প্রতি। এমনিতেই অজি নিজে কিছু করার চিন্তায় ছিলেন, তাই নিজের ব্যান্ড খোলার সিদ্ধান্ত থেকে সাবাথ ছাড়লেন। নিজের নামে ব্যান্ড খুললেন Randy Rhoads-কে নিয়ে। ২০১২ সালে সাবাথে ফেরত আসার আগ পর্যন্ত এই ব্যান্ডেই ছিলেন,  জনপ্রিয়ই ছিলেন। বিখ্যাত কোন ব্যান্ড ছেড়ে এসে নিজের ব্যান্ড খুলে খুব কম মিউজিশিয়ানে এত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।

Black_Sabbath_Heaven_and_Hell

5675C42A-black-sabbath-ronnie-james-dio-era-to-be-featured-in-rock-n-roll-fantasy-camp-image
Black Sabbath with Dio (2nd from Left)

অজির বিদায়ের পর ভোকাল হিসেবে আসলেন আরেক লিজেন্ড রনি জেমস ডিও।JKnowles_13_0205_V10text1-600x600

ডিওর সাথে করা দুটো সাবাথ এলবাম Heaven and Hell, The Mob Rules বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল, তবে সাবাথের অরিজিনাল সাউন্ডের একটা অভাব বোধ হচ্ছিল কোথায় যেন। যদিও ব্ল্যাক সাবাথের সেরা এলবামের মধ্যে Heaven and Hell প্রথমদিকেই থাকবে। দুইটা এলবামের পর ডিও বিদায় নেন। এরপর ব্ল্যাক সাবাথ টনি মার্টিন, গ্লেন হিউস আর ডিওকে নিয়ে একের পর এক এলবাম রিলিজ করে যায়। যদিও এর কোনটাতেই সাবাথের আগের সাউন্ড ছিল না, বেশিরভাগ এলবামই জনপ্রিয়তা পায় নি।  এরপর ব্ল্যাক সাবাথ দীর্ঘদিনের বিরতিতে থাকার পর ২০১৪ সালে বের হয় তাদের সর্বশেষ এলবাম “13” ,ভোকালে আবার সেই অজি অসবোর্ন। আর কোন সাবাথ এলবাম সম্ভবত আমরা পাবো না। এই বছরের জুলাই মাসে সমাপ্তি ঘটবে সাবাথের লাইভ কনসার্টেরও।

…………………………………..

ব্ল্যাক সাবাথ যখন খ্যাতির তুঙ্গে তখন বার্মিংহামে জন্ম হয় ব্রিটিশ স্টিল রিফাইনারি কোম্পানির, যাকে আমরা চিনি জুডাস প্রিস্ট হিসেবে! গিটারিস্ট গ্লেন টিপটন আর কে কে ডাউনিং এর দ্বৈতগিটার রিফ আর রব হালফোর্ডের স্ক্রিমিং, লেদার আউটফিট – সব মিলিয়ে এ এক নতুন উন্মাদনা। উন্মাদনা বলার কারণও আছে। এক্সট্রিম মিউজিকের কারণে জুডাস প্রিস্টকে একাধিক আত্মহত্যার উৎসাহদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে মামলা পর্যন্ত করা হয়েছিল, যেমনটি করা হয়েছিল আমেরিকান থ্রাশ মেটাল ব্যান্ড স্লেয়ারের নামেও!

a55d9d491f3f692541ac79c8aa3862a4

ব্ল্যাক সাবাথ হেভি মেটালের জন্ম আর রূপ দিয়েছিল। আর এর পরিশোধনের কাজটা করেছে জুডাস প্রিস্ট, বেশ ভালোভাবেই করেছে। একটার জায়গায় মেটালে গিটার আসল দুইটা, তাতে রিফের এগ্রেশন আর প্রিসিশানটাও বাড়ল। প্রথমদিকের এলবামগুলোতে তাদের মিউজিক সাবাথের মতোই স্লো টেম্পোর ছিল। ১৯৮০ এর “British Steel” এলবামে এই দৃশ্য পুরোটা পাল্টে যায়। Before the Dawn, Breaking the Law, Beyond the Realms of Death, Judas Rising, Ram it Down, Freewheel Burning এর মতো অসংখ্য ট্রেডমার্ক গান প্রিস্টের অবস্থানকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যায়। ১৯৯০ এর Painkiller এলবামে তাদের হেভি মেটাল দক্ষতার চরম নমুনা পাওয়া যায়। ব্যক্তিগতভাবে, এটি আমার সবচেয়ে প্রিয় প্রিস্ট এলবাম। টাইটেল গানটিতে ড্রামার স্কট ট্রাভিসের ডাবল বেজ ড্রামিং একবার শুনলে কেউ ভুলতে পারবে না! স্টেজে এই এলবামের কাভারের মতো হালফোর্ড একটা হার্লে ডেভিডসন বাইক চালাতেন, আর এক পাশে টিপটন আর ডাউনিং একসাথে হেডব্যাং করতেন – অনেক কিছুর মতো এই দৃশ্যও প্রিস্টের ট্রেডমার্ক!

RobHalford_OnScene
Rob Halford
Glenn+Tipton+K+k+Downing+Judas+Priest+Gibson+fW1G_NnHjVWl
KK Downing & Glenn Tipton

প্রিস্টের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আইটেমের নাম রব হালফোর্ড, যাকে ডাকা হয় “Metal God”। হালফোর্ডের কথা আলাদাভাবে বলা দরকার। এখন পর্যন্ত কোন হেভি মেটাল ভোকালের গলাতেই হালফোর্ডের মতো হাই পিচ নেই। ২০০৩ সালের Angel of Retribution এলবাম পর্যন্ত হালফোর্ডের গলার এই পিচ অনেকাংশেই অক্ষত ছিল। সর্বশেষ এলবাম Redeemer of Souls এ সেটি আর না থাকলেও  ৬৫ বয়সী একজন ভোকালের পক্ষে সেটা অনেক বেশিই। পেইনকিলার এলবামের পর হালফোর্ড বিদায় নিয়ে নিজের নামে ব্যান্ড খুলেন। সাবাথের সাথে প্রিস্টের সবচেয়ে বেশি মিল বোধহয় এই অংশটুকুতে। তবে কয়েকটি এলবাম ছাড়া হালফোর্ডের ব্যান্ড খুব একটা জনপ্রিয় হয় নি। ব্যক্তিগতভাবে হালফোর্ড একজন আত্মস্বীকৃত সমকামী , এই বিষয়টি যথেষ্ট আলোচনার সৃষ্টি করলেও তাতে তাঁর “Metal God” ইমেজ ক্ষুণ্ণ হয় নি এতটুকুও।

প্রিস্টে নতুন ভোকাল হিসেবে আসেন টিম রিপার ওয়েনস। টিমের গলা ছিল অসাধারণ, হালফোর্ডের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে এরচেয়ে

ripper
Tim Ripper Owens

ভালো কাউকে পাওয়া সম্ভবও না। গলার পিচও ছিল অনেক উপরে। টিম দুইটা এলবাম করেন প্রিস্টের সাথে – Jugulator আর Demolition। দুটো এলবামই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।  সবাই যখন টিমকে নিয়েই নতুন প্রিস্টের কথা ভেবে নিচ্ছিল তখনই হালফোর্ড ফিরে আসার কথা জানান। কাজেই টিমকে ব্যান্ড ছাড়তে হয় । পরে একজন সলো আর্টিস্ট, Iced Earth, Yngwie Malmsteen’s Rising Force ইত্যাদি ব্যান্ডে ভোকাল হিসেবে যোগ দিলেও Jugulator এর সমান মানের এলবাম একটিও রিলিজ করতে পারেন নি। হাই পিচ গলার সাথে এসব ব্যান্ডের মিউজিকের সিনক্রোনাইজেশনটা ভালোমতো না হওয়াই সম্ভবত এর কারণ।

হালফোর্ড আসার পর আরও তিনটা এলবাম রিলিজ হয়।দুই গিটারিস্টের একজন ডাউনিং ২০১১ সালে অবসরে যান। নতুন গিটারিস্ট রিচি ফকনারের সাথে একমাত্র এলবাম  Redeemer of Souls। হালফোর্ডের আগের মতো গলা থাকলে এই এলবামকে প্রিস্টের যেকোন ক্লাসিক এলবামের সাথে তুলনীয় বলা যেত। । ৪০ বছর ধরে রিফে ভ্যারিয়েশন এসেছে অনেকবার কিন্তু রিফের মানের কোনরকম অধঃপতন ঘটে নি – প্রিস্টের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য সম্ভবত এটাই। হেভি মেটালকে ডিফাইন করে এমন লিরিক শুধু জুডাস প্রিস্টেরই আছে –

“When the power chords come crashing down
Go tearing through my senses
It’s for the strong, not for the weak
In light and dark dimensions

It stimulates, regenerates
It’s therapeutic healing
It lifts our feet up off the ground
and blasts us through the ceiling

Between the eyes
I hear it screaming
And it electrifies
Your inner feelings”

হেভি মেটালের জগতে এই দুইটা ব্যান্ডের প্রভাব ব্যাখ্যা করার মতো স্পর্ধা আমার এখনও হয় নি। তাই সেদিকে যাচ্ছি না। বরাবরের মতো কিছু গান সাজেস্ট করছি। তবে এই দুটি ব্যান্ডকে বুঝতে গেলে সবগুলো এলবামই শোনা উচিৎ।
টরেন্ট লিংক – Black Sabbath Discography   Judas Priest Discography

Black Sabbath
……………
War Pigs
The Mob Rules
The Wizard
Saobotage
N.I.B
Killing Yourself to Live
Sabbath Bloody Sabbath
Iron Man
Heaven and Hell
Children of the Grave
Black Sabbath
God is Dead?
Symptom of the Universe

Judas Priest
……………
Ram it Down
Painkiller
Angel
All Guns Blazing
Judas Rising
Victim of Changes
RockaRolla
A Touch of Evil
Dreamer Deceiver
Night Crawler
You’ve Got Another Thing Coming
The Ripper

\m/

পিংক ফ্লয়েড

রক মিউজিকের ফ্যান, কিন্তু পিংক ফ্লয়েডের গান শোনেন নি এরকম মানুষ খুঁজে বের করা মোটামুটি কঠিন ব্যাপার। Comfortably Numb, Hey You, Wish You Were Here এই গানগুলো সবারই শোনা। ব্রিটিশ এই ব্যান্ডের মিউজিক নিয়েই আজকের লেখা।

গিটারিস্ট রজার ওয়াটার্স আর ড্রামার নিক ম্যাসন পড়ত লন্ডন পলিটেকনিকে। আর্কিটেকচারের ছাত্র কিবোর্ডিস্ট রিচার্ড রাইটকে নিয়ে শুরু হয় তাদের ব্যান্ড। গিটারে আসে সিড ব্যারেট নামের এক তরুণ মিউজিকাল জিনিয়াস। তাকে  নিয়ে প্রথম এলবাম বেরুলো ১৯৬৭ তে, The Piper at the Gates of Dawn। এলবামের বেশিরভাগ গান সিডের লেখা। সমস্যা হল, সিড ছিল এলএসডিতে আসক্ত। বিবিসিতে ফ্লয়েডের তিনটাশো করার কথা ছিল , দ্বিতীয় শো এর পরপরেই সিডের আচরণে অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। তাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে গিটার থেকে চলে এল রজার, সিডের বিদায়ের কিছুদিন আগে নতুন গিটারিস্ট হিসেবে যোগ দেয় ডেভিড গিলমোর। এতদিন ভোকালের কাজটাও করত সিড, গিলমোরের উপর গিটার আর ভোকাল দুটোর দায়িত্বই পড়ে। এতক্ষণে নিশ্চয় গুলিয়ে ফেলেছেন পাঠক! সহজ কথায় এখন ড্রামে নিক মেসন, কিবোর্ডে রিচার্ড রাইট, গিটার কাম ভোকালে গিলমোর আর বেজে রজার ওয়াটার্স।

Pink_Floyd_(Logo)
ব্যান্ডের এর পরের কাহিনিটুকু বেশ চমকপ্রদ। একে একে এলবাম বেরুতে থাকে  A Saucerful of Secrets, More, Ummagumma, Atom Heart Mother। পশ্চিমে তখন ড্রাগের প্রভাব অনেক বেশি। আর সাইকিডেলিক রক মিউজিকও কেমন একটা ঘোরের সৃষ্টি করে। সবমিলিয়ে পিংক ফ্লয়েডের জনপ্রিয় হতে সময় লাগল না। ক্রিম, দা জিমি হেনড্রিক্স এক্সপেরিয়েন্সের সাথে পিংক ফ্লয়েডও তখন মেইনস্ট্রিম ব্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেল। পরের এলবামের নাম  Meddle । ফ্লয়েডের মিউজিকের নতুন মোড়টা ঘুরল এখানে। ডেভিড গিলমোরের মিউজিকাল জিনিয়াসের প্রকাশ বেশ ভালোভাবেই হল এই এলবামে। Echoes এই এলবামের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ।। মজার ব্যাপার হল, গিলমোর প্রথমে গানটি গাইতেই চান নি এর ডার্ক থিমের কারণে। গানের নামটাও প্রথমে ছিল “Nothing”!
৫ কোটির বেশি কপি বিক্রি হওয়া পরের এলবামের নাম  The Dark Side of the Moon। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গানের এলবামের তালিকায় এটি প্রথম পাঁচেই আছে। জীবনবোধ, সামাজিক ব্যবস্থা নিয়ে লেখা লিরিকগুলো এককথায় মনকাড়া।

 

Dark_Side_of_the_Moon
Dark Side of the Moon album cover

“There’s someone in my head and it’s not me!”

“Tired of lying in the sunshine staying home to watch the rain..
You are young and life is long and there is time to kill today…
And then one day you find ten years have got behind you..
No one told you when to run, you missed the starting gun”

সম্ভব হলে সবগুলো লিরিকই তুলে দিতাম! পাঠক গুগল করে নেবেন।


Wish You Were Here আমার সবচেয়ে প্রিয় পিংক ফ্লয়েড এলবাম । রিলিজ হয় ১৯৭৫ সালে। মাত্র ৫ টা গান ছিল এলবামে, তার মধ্যে Shine on You Crazy Diamond নামের দুইটি গান ছিল মূলত ইন্সট্রুমেন্টাল। টাইটেল গানটি লেখা সাবেক ব্যান্ড মেম্বার সিড ব্যারেটকে নিয়ে। লিরিকের ইমপ্রুভমেন্ট চরমে পৌঁছায় এই এলবামে। Animals এলবামেও এই ধারা অব্যাহত থাকে  আগের এলবামগুলোতে গিলমোরের লেখা গান ছিল বেশি, Animals এলবাম থেকে শুরু হয় ওয়াটার্সের সং-রাইটার হিসেবে আত্মপ্রকাশ। যার চরম নমুনা দেখা গেল পরের এলবামে।…..

wall30th_big
The Wall এর ব্যাপারে বলার আগে কনসেপ্ট এলবাম কি সেটা একটু বলি। একটা সার্টেইন থিমের উপর ভিত্তি করেই যখন একটা এলবামের গানগুলো লেখা আর সুর করা হয় , সেটাকে কনসেপ্ট এলবাম বলে। Camel এর Stationary Traveller কনসেপ্ট এলবামের অনন্য উদাহরণ, লেখা হয়েছিল দুই জার্মানির বিভাজন নিয়ে। The Wallএর থিমটা ছিল সাদাসিধে এক ছেলে, যার নাম পিংক, তার জন্ম থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত চারপাশে তৈরি হওয়া নানারকম অদৃশ্য দেয়াল নিয়ে। অসম্ভব জনপ্রিয় হয় এলবামটি ; যার বেশিরভাগ গানই রজারের লেখা। বিশেষ করে শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা নিয়ে লেখা Another Brick in the Wall 1,2,3 গানগুলো সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়। এই এলবামের লাইভ পারফরমেন্সগুলো মিউজিকের জগতে অসাধারণ এক সংযোজন। কার্ডবোর্ড দিয়ে দেয়াল বানানো, নানারকম পাপেট দিয়ে চরিত্রগুলোর রূপায়ন আর সবশেষে দেয়ালটা ভেঙে ফেলা – এলবামের থিম, লিরিক সবকিছুর এরকম দৃষ্টিগ্রাহ্য উপস্থাপনা অদ্ভুত এক আবহ সৃষ্টি করে।

pink-floyd-wall-concert-1990-berlin
এরমধ্যে ব্যান্ড মেম্বারদের মধ্যে ঝামেলা পাকিয়ে উঠেছে ভালো করেই। রজার আর গিলমোরের মধ্যে ইগো নিয়ে সংঘর্ষ আগে থেকেই ছিল , The Final Cut এলবাম প্রকাশের পর সেটা নতুন রূপ পেল। ফলাফল – ১৯৮৫ তে   রজারের প্রস্থান। গিলমোর ব্যান্ড চালিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মেসন আর রিচার্ডকে নিয়ে। আরও দুটি অসাধারণ এলবাম রিলিজ হয় গিলমোরের হাত ধরে – A Momentary Lapse of Reason, The Division Bell।  দুটোই বেশ জনপ্রিয় হয়। এরপরেই ব্যান্ডটি ভেঙে যায় একেবারেই। ২০০৫ সালে হয় একটি রি-ইউনিয়ন কনসার্ট, ২০০৮ এ ক্যান্সারে মারা যান রিচার্ড রাইট।
এতকিছুর পরেও ২০১৪ এর নভেম্বরে নিক মেসন আর গিলমোর মিলে সর্বশেষ ফ্লয়েড এলবামটি বের করেন আগের কিছু ডেমো টেপের উপর ভিত্তি করে। পুরো এলবামে কেবল একটা গানেই লিরিক ছিল, গিলমোরের স্ত্রীর লেখা  Louder than Words।

PinkFloydEndless6065903
গিলমোরের ভাষ্যমতে আর কোন পিংক ফ্লয়েড এলবাম পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। কিন্তু পিংক ফ্লয়েড যে পিনিক তৈরি করে গেছে, তাতে শ্রোতারা আজীবন বুঁদ হয়ে থাকবে তাতে সন্দেহ নেই।

পুনশ্চ – ব্যান্ড ছাড়ার পরেও ১৯৯০ সালে অনেক অতিথি শিল্পীদের নিয়ে রজার ওয়াটার্স বার্লিনে একটি The Wall কনসার্ট করেন। আর্টিস্টদের মধ্যে লিজেন্ডারি ব্যান্ড স্করপিয়ন্স আর ব্রায়ান এডামসের মতো বিখ্যাতরা ছিলেন।

পুনশ্চ ২ – পিংক ফ্লয়েড Live at Pompeii নামে ইতালির পম্পেই কলোসিয়ামে একটি কনসার্ট করেছিল ১৯৭২ এ, কনসার্টে টেকনিশিয়ানরা আর ছাড়া আর কোন শ্রোতা ছিল না!

পিংক ফ্লয়েড সাজেশন –
Comfortably Numb
Bike
Paint Box
A Saucerful of Secrets
Hey You
Echoes
Welcome to the Machine
Time
Brain Damage
Sorrow
The Division Bell…..

ক্লান্ত বোধ করছেন?! এই তালিকায় কমপক্ষে ৫০ টা গান রাখার ইচ্ছে ছিল, ইচ্ছেটা কোনমতে হজম করে ফেলেছি! শুনুন এবং পিনিকে থাকুন! ভালো লাগলে Add Meh! 😀

মেটালিকা

Thrash Metal

 

মেটালিকা! পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ব্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাদের নিজস্ব থ্রাশ ধারা থেকে সরে আসার কারণে অনেকের কাছে সমালোচিত হলেও, দিনশেষে রক মিউজিকের জগতেও মেটালিকার জনপ্রিয়তা কম নয়।

শুরু হয়েছিল ১৯৮১-র অক্টোবরে। তরুণ ড্রামার লার্স উলরিখ দা রিসাইক্লার  পত্রিকায় মিজিশিয়ানের খোঁজে বিজ্ঞাপন দিল। লেদার চার্ম ব্যান্ডের গিটারিস্ট জেমস হেটফিল্ডের চোখে পড়ল বিজ্ঞাপন। নক নক! পরে একই পত্রিকায় দ্বিতীয় আরেকটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাওয়া যায় ডেভ মাস্টেইনকে। ড্রামে উলরিখ, রিদম গিটারে হেটফিল্ড আর লিড গিটারে মাস্টেইন- শুরু হয় মেটালিকার যাত্রা। রইল বাকি বেজ! প্রথমে হেটফিল্ডের রুমমেট রন ম্যাকগভনিকে নেওয়া হল। এখানে সেখানে কনসার্ট করা হল, মটরহেড, ডিপ পার্পল, ডায়মন্ড হেড কাভার দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের গানও লেখা শুরু হল। “Hit the Lights” নামের একটা গান নিয়মিত স্টেজে বাজালো মেটালিকা।

সমস্যা দেখা দিল ডেভ মাস্টেইনকে নিয়ে। ডেভের মদের প্রতি আসক্তি দিনদিন বেড়েই যাচ্ছিল। একদিন মাতাল হয়ে রনের বেজেও কিছুটা মদ ঢেলে দিল। অবস্থা বেগতিক ডেভকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই বিদায় বা বের করে দেওয়া জন্ম দেয় থ্রাশ মেটালের অন্য আরেকটা গল্পের, গল্পের নাম “মেগাডেথ”। সে গল্প অন্যদিন হবে। রনও ব্যান্ড ছাড়ল। নতুন বেজিস্ট পাওয়া গেল Whiskey a Go Go কনসার্টে। যদিও ক্লিফ বার্টনের বাজানোর অভিনবতা দেখে  হেটফিল্ড আর উলরিখের মনে হয়েছিল লোকটা বেজ না, লিড গিটারই বাজাচ্ছে। এক্সোডাস ব্যান্ড থেকে আনা হল গিটারিস্ট কার্ক হ্যামেটকে। তিনে একে চার। ব্যান্ড হয়ে গেল। আবার বাজানো শুরু।
প্রথম এলবাম বেরুলো ১৯৮৩ তে – “Kill ’em All” যেটাকে প্রথম পূর্ণাঙ্গ থ্রাশ মেটাল এলবাম বলা হয়। মেটালিকাকে অসম্ভব জনপ্রিয়তা এনে দেয় এই এলবামটি। পরের এলবাম “Ride the Lightning”, এবারও হিট ( দুঃখিত , মেটালিকা নিয়ে লিখতে গেলে হিট শব্দটি বারবার ব্যবহার করতেই হবে!)। আগের এলবামের চেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং ইমপ্রুভড সাউন্ড  ছিল এটাতে। তৃতীয় এলবামের নাম “Master of Puppets”। এই এলবামের ব্যাপারে কোনকিছু পাঠক পড়তে চাইবেন বলে মনে হয় না, কিছু বলার অপেক্ষা রাখেও না। অতএব, নেক্সট! নেক্সট-এর আগেই একটা ঘটনা , আসলে দূর্ঘটনা, ঘটে গেল। সুইডেনে ব্যান্ডের বাসটি পিছলে গিয়ে উল্টে-পালটে যায়। বেজিস্ট ক্লিফ বার্টনের অকালমৃত্যু ঘটে বাসের চাপা পড়ে।

জেসন নিউস্টেডকে নেওয়া হল বেজে। এরপর একে একে বের হল  “And Justice for All”,”The Black Album”,”Load”,”Reload”। শেষোক্ত দুটি এলবামে মেটালিকার থ্রাশ মেটাল থেকে রক ঘরানায় আসার কারণে অনেক শ্রোতাই মনঃক্ষুণ্ণ হন। ২০০১ সালে জেসন ব্যান্ড ছাড়েন বাকি সদস্যদের সাথে বনিবনা না হওয়ায়। তখন মেটালিকার নতুন এলবাম রেকর্ড করার কথা। প্রডিউসার বব রক বেজিস্টের কাজটা করে দেন। রিলিজ হল “St. Anger”। মজার ব্যাপার হল, এই এলবামে একটিও গিটার সলো নেই। যথারীতি অনেক এলবামই বিক্রি হল। কিন্তু মিউজিক বিশ্লেষকরা এই অদ্ভুত এলবামটিকে ভালো চোখে দেখেন নি। এরপর অজি অসবোর্ন থেকে বেজে আসল রবার্ট ট্রুজিলো, আর জেসন চলে গেল অজি অসবোর্নে, রবার্টের জায়গায়। রবার্টকে সাথে নিয়ে প্রকাশিত হয় মেটালিকার সর্বশেষ এলবাম “Death Magnetic”, ২০০৮ সালে। এলবামটি মেটালিকার মূলধারায় ফিরে আসার ইঙ্গিত বহন করায় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। যদিও পরের আট বছর, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মেটালিকা নতুন কোন এলবাম রিলিজ করে নি। তবে ব্যান্ড মেম্বারদের ভাষ্যমতে বছরখানেকের মধ্যেই নতুন এলবাম পাওয়া যাবে।

Metallica-disography

পুনশ্চ – ৯ টি স্টুডিও এলবাম ছাড়াও মেটালিকা জেসন নিউস্টেডের সময়ে “Garage Inc.” নামের কাভার এলবাম রিলিজ আর ১৯৯৯ এ “San Fransisco Symphony”, তথা অপেরা মিউজিকের সাথে থ্রাশ মেটালের মিশ্রণে একটি কনসার্ট করে। শেষোক্ত কনসার্টটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।

সাজেশন –
Master of Puppets
Sad But True
Disposable Heroes
And Justice for All
Creeping Death
Seek and Destroy
Enter Sandman
The Unforgiven 1,2,3
Disposable Heroes
King Nothing
Fuel
The Call of Ktulu
The Memory Remains
Some Kind of Monster

লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। রক আর মেটাল ব্যান্ডগুলো নিয়ে বাংলায় লেখার ইচ্ছে ছিল অনেক দিন ধরে। শুরু করা হল অবশেষে।

\m/