মেটালিকা! পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ব্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাদের নিজস্ব থ্রাশ ধারা থেকে সরে আসার কারণে অনেকের কাছে সমালোচিত হলেও, দিনশেষে রক মিউজিকের জগতেও মেটালিকার জনপ্রিয়তা কম নয়।
শুরু হয়েছিল ১৯৮১-র অক্টোবরে। তরুণ ড্রামার লার্স উলরিখ দা রিসাইক্লার পত্রিকায় মিজিশিয়ানের খোঁজে বিজ্ঞাপন দিল। লেদার চার্ম ব্যান্ডের গিটারিস্ট জেমস হেটফিল্ডের চোখে পড়ল বিজ্ঞাপন। নক নক! পরে একই পত্রিকায় দ্বিতীয় আরেকটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাওয়া যায় ডেভ মাস্টেইনকে। ড্রামে উলরিখ, রিদম গিটারে হেটফিল্ড আর লিড গিটারে মাস্টেইন- শুরু হয় মেটালিকার যাত্রা। রইল বাকি বেজ! প্রথমে হেটফিল্ডের রুমমেট রন ম্যাকগভনিকে নেওয়া হল। এখানে সেখানে কনসার্ট করা হল, মটরহেড, ডিপ পার্পল, ডায়মন্ড হেড কাভার দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের গানও লেখা শুরু হল। “Hit the Lights” নামের একটা গান নিয়মিত স্টেজে বাজালো মেটালিকা।
সমস্যা দেখা দিল ডেভ মাস্টেইনকে নিয়ে। ডেভের মদের প্রতি আসক্তি দিনদিন বেড়েই যাচ্ছিল। একদিন মাতাল হয়ে রনের বেজেও কিছুটা মদ ঢেলে দিল। অবস্থা বেগতিক ডেভকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই বিদায় বা বের করে দেওয়া জন্ম দেয় থ্রাশ মেটালের অন্য আরেকটা গল্পের, গল্পের নাম “মেগাডেথ”। সে গল্প অন্যদিন হবে। রনও ব্যান্ড ছাড়ল। নতুন বেজিস্ট পাওয়া গেল Whiskey a Go Go কনসার্টে। যদিও ক্লিফ বার্টনের বাজানোর অভিনবতা দেখে হেটফিল্ড আর উলরিখের মনে হয়েছিল লোকটা বেজ না, লিড গিটারই বাজাচ্ছে। এক্সোডাস ব্যান্ড থেকে আনা হল গিটারিস্ট কার্ক হ্যামেটকে। তিনে একে চার। ব্যান্ড হয়ে গেল। আবার বাজানো শুরু।
প্রথম এলবাম বেরুলো ১৯৮৩ তে – “Kill ’em All” যেটাকে প্রথম পূর্ণাঙ্গ থ্রাশ মেটাল এলবাম বলা হয়। মেটালিকাকে অসম্ভব জনপ্রিয়তা এনে দেয় এই এলবামটি। পরের এলবাম “Ride the Lightning”, এবারও হিট ( দুঃখিত , মেটালিকা নিয়ে লিখতে গেলে হিট শব্দটি বারবার ব্যবহার করতেই হবে!)। আগের এলবামের চেয়ে পরিচ্ছন্ন এবং ইমপ্রুভড সাউন্ড ছিল এটাতে। তৃতীয় এলবামের নাম “Master of Puppets”। এই এলবামের ব্যাপারে কোনকিছু পাঠক পড়তে চাইবেন বলে মনে হয় না, কিছু বলার অপেক্ষা রাখেও না। অতএব, নেক্সট! নেক্সট-এর আগেই একটা ঘটনা , আসলে দূর্ঘটনা, ঘটে গেল। সুইডেনে ব্যান্ডের বাসটি পিছলে গিয়ে উল্টে-পালটে যায়। বেজিস্ট ক্লিফ বার্টনের অকালমৃত্যু ঘটে বাসের চাপা পড়ে।
জেসন নিউস্টেডকে নেওয়া হল বেজে। এরপর একে একে বের হল “And Justice for All”,”The Black Album”,”Load”,”Reload”। শেষোক্ত দুটি এলবামে মেটালিকার থ্রাশ মেটাল থেকে রক ঘরানায় আসার কারণে অনেক শ্রোতাই মনঃক্ষুণ্ণ হন। ২০০১ সালে জেসন ব্যান্ড ছাড়েন বাকি সদস্যদের সাথে বনিবনা না হওয়ায়। তখন মেটালিকার নতুন এলবাম রেকর্ড করার কথা। প্রডিউসার বব রক বেজিস্টের কাজটা করে দেন। রিলিজ হল “St. Anger”। মজার ব্যাপার হল, এই এলবামে একটিও গিটার সলো নেই। যথারীতি অনেক এলবামই বিক্রি হল। কিন্তু মিউজিক বিশ্লেষকরা এই অদ্ভুত এলবামটিকে ভালো চোখে দেখেন নি। এরপর অজি অসবোর্ন থেকে বেজে আসল রবার্ট ট্রুজিলো, আর জেসন চলে গেল অজি অসবোর্নে, রবার্টের জায়গায়। রবার্টকে সাথে নিয়ে প্রকাশিত হয় মেটালিকার সর্বশেষ এলবাম “Death Magnetic”, ২০০৮ সালে। এলবামটি মেটালিকার মূলধারায় ফিরে আসার ইঙ্গিত বহন করায় বেশ জনপ্রিয়তা পায়। যদিও পরের আট বছর, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মেটালিকা নতুন কোন এলবাম রিলিজ করে নি। তবে ব্যান্ড মেম্বারদের ভাষ্যমতে বছরখানেকের মধ্যেই নতুন এলবাম পাওয়া যাবে।
পুনশ্চ – ৯ টি স্টুডিও এলবাম ছাড়াও মেটালিকা জেসন নিউস্টেডের সময়ে “Garage Inc.” নামের কাভার এলবাম রিলিজ আর ১৯৯৯ এ “San Fransisco Symphony”, তথা অপেরা মিউজিকের সাথে থ্রাশ মেটালের মিশ্রণে একটি কনসার্ট করে। শেষোক্ত কনসার্টটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।
সাজেশন –
Master of Puppets
Sad But True
Disposable Heroes
And Justice for All
Creeping Death
Seek and Destroy
Enter Sandman
The Unforgiven 1,2,3
Disposable Heroes
King Nothing
Fuel
The Call of Ktulu
The Memory Remains
Some Kind of Monster
লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। রক আর মেটাল ব্যান্ডগুলো নিয়ে বাংলায় লেখার ইচ্ছে ছিল অনেক দিন ধরে। শুরু করা হল অবশেষে।
\m/
প্রবলেম হইল এইগুলান তোহ উইকিতেই আছে। সাম কাইন্ড অফ মন্সটার ডকু থেকা কিছু তুইলা দিলে ভাল্লাগত। ব্লগের ব্যাপ্তি টা বেশি। তাই পরিসরটাও বড় করে নিতে হয়।
লিখা ভাল্লাগছে, সন্দেহ নাই। অফেন্ডেড হইয়ো না। পছন্দ করি দেইখাই লিখসি।
LikeLiked by 1 person
এই মুহূর্তে প্রশংসার চেয়ে এরকম গঠনমূলক সমালোচনাই আমার বেশি দরকার। 🙂
LikeLike
হুদাই সমালোচক হবো কেনো? লেখাটা আমার মনের মতো! শুধু “Disposable Heroes” টা দু’বার সাজেশনে। বিগ ফোর শেষ করেই “Testament” নিয়ে লেখ। পরে “Exodus” এবং বাকি সব।
LikeLiked by 1 person
\m/
LikeLike